আইসিটিতে ২০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে এ বছরে
|
৪ মাঘ ১৪২৭ |
Sunday, January 17, 2021
শোভন দত্ত : ২০২১ সালে সবার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। একইসঙ্গে ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি খাতে ২০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
শনিবার আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারের বিসিসি মিলনায়তনে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ১২ বছর’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে বিগত ১২ বছরে আইসিটি খাতে ১৫ লাখের বেশি তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হয়েছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা আশা করছি এ সংখ্যা ২০ লাখে পৌঁছাবে। তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি অক্সিজেনের মতো প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। কৃষি, স্বাস্থ্য, ব্যবসা, উদ্ভাবন, প্রাকৃতিক সম্পদ, দক্ষতা, কর্মসংস্থান, অর্থনীতি-প্রত্যেকটা জায়গায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যে চ্যালেঞ্জ সেটা মোকাবেলা করতে হলে এবং করোনাকালীন সময়ে আমাদের যে পরিবর্তিত পৃথিবী, তার সাথে খাপ খাওয়াতে হলে তার প্রত্যেকটা সেক্টরে আমাদের আইসিটিকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
তার জন্য অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার আলোকে আমরা যে উদ্যোগগুলো নিয়েছি, সেগুলো হল- মানসম্মত শিক্ষা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি; গবেষণা ও উদ্ভাবনের পরিবেশ সৃষ্টি; তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সক্ষমতা বৃদ্ধি; আইসিটি অবকাঠামো তৈরি; বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি; তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্র্যান্ডিং; গ্রামীণ অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর পরিসেবা।
এই পরিকল্পনা সামনে রেখে আইসিটি বিভাগের সেই ১২টি উদ্যোগ হল- সেন্টার অব এক্সিলেন্স, এজেন্সি টু ইনোভেট, স্টাবলিশিং ডিজিটাল কানেকটিভিটি, শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি, ডিজিটাল লিডারশিপ একাডেমি, এনহান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি প্রজেক্ট, ইন্টার অপারেবল ডিজিটাল ট্রানজাকশন প্লাটফর্ম, সাইবার সিকিউরিটি হেল্প ডেস্ক, ওপেন ডেটা অ্যানালিটিক্স প্লাটফর্ম (জনতার সরকার), ভার্চুয়াল কোর্ট, ন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ, ন্যাশনাল ডিজিটাল লাইব্রেরি। উদ্যোগগুলোর সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কেও সাংবাদিকদের জানান পলক।
তিনি জানান, একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সারা দেশের ১২টি হাইটেক পার্কে সেন্টার অব এক্সিলেন্স স্থাপন করা হবে। এজেন্সি টু ইনোভেট স্থাপনের জন্য আইনের খসড়া পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে তা মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য পাঠাবে আইসিটি বিভাগ।
এষ্টাব্লিশিং ডিজিটাল কানেকটিভিটি প্রকল্পের আওতায় ২০২৫ সালের মধ্যে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত এক লাখ ১০ হাজার সংযোগ স্থাপন করা হবে।
মাদারীপুরের শিবচরে ‘শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি’ স্থাপন করার প্রকল্প প্রায় শেষ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলেই তার কাজ শুরু হবে। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল-বিসিসি বাস্তবায়ন করছে এনহান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি প্রজেক্ট। বাংলাদেশের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল কার্যক্রম ইন্টার অপারেবল করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইসিটি বিভাগের ইনোভেশন ডিজাইন ও এন্টারপ্রেনারশিপ একাডেমি বাস্তবায়ন করবে ‘ইন্টার অপারেবল ডিজিটাল ট্রানজাকশন প্ল্যাটফর্ম।
সাইবার সিকিউরিটি হেল্প ডেস্ক-১০৪ সম্পর্কে পলক জানান, এর পরীক্ষামূলক কাজ চলছে এখন। জরুরি সেবা ৩৩৩- এর সঙ্গে সমন্বয় করে ‘১০৪’ সেবা চালু করতে কাজ করছে আইসিটি বিভাগ; যেন ‘৩৩৩’ নাম্বারে কল করেও কেউ সাইবার অপরাধের প্রতিকার পেতে পারে।
আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স, ন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং- এনএলপি, বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্সের সমন্বয়ে তৈরি হচ্ছে ‘ওপেন ডেটা অ্যানালিটিক্স প্ল্যাটফর্ম (জনতার সরকার)’ । এই প্ল্যাটফর্মের বেটা ভার্সনের কাজ চলছে। এই প্ল্যাটফর্ম উন্মুক্ত হলে নাগরিকদের পাশাপাশি সেবা পাবেন নীতিনির্ধারকরাও।
ভার্চুয়াল কোর্টের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ ২০২১-২২ সাল মেয়াদে শেষ হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে আইনি কার্যক্রম সম্পূর্নভাবে ভার্চুয়াল কোর্টে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে আইসিটি বিভাগের।
সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোর রোগী ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার কাজ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে শুরু হচ্ছে ন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ কার্যক্রম। সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে শুরু হচ্ছে এই প্রকল্প। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল-বিসিসি ও এটুআই যৌথভাবে এ প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে। প্রথম পর্যায়ে ৫০টি উপজেলা, ১০টি জেলা ও পরে সারা দেশে এ প্রকল্প শুরু করা হবে। ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের উদ্যোগে কাজ চলছে ন্যাশনাল ডিজিটাল লাইব্রেরি প্রকল্পের। প্রেক্ষিত পরিকল্পনা-২০৪১ এর আলোকে ত্রিমুখী কৌশলের কথাও জানান প্রতিমন্ত্রী পলক।
তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ উন্নত দেশে রূপান্তর, মাথাপিছু আয় ১২ হাজার ৫০০ ডলারের বেশি; সম্পূর্ণভাবে দারিদ্র্য বিমোচন; ন্যাশনাল স্পেস রিসোর্চ সেন্টার গড়ে তুলতে হবে আমাদের। এজন্য ত্রিমুখী কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি আমরা। সেগুলো হল- সফটওয়্যার ও প্রসেস উদ্ভাবন এবং পরিসেবা ডিজিটাইজেশন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উদ্ভাবনের সঙ্গে শ্রম সুবিধার সংমিশ্রণ, প্রতিযোগিতা এবং কম কার্বন অর্থনীতির জন্য চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে কাজে লাগানো। সংবাদ সম্মেলনে তিনি গত ১২ বছরে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নানা পরিবর্তনের খতিয়ান তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা মিলিয়ে এখন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন-বেসিসের সদস্য সংখ্যা তিন লাখের বেশি। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং-বাক্যতে ৫০ হাজারের বেশি তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হয়েছে। দেশে আইটি ও আইটিএস খাতে এখন ১৫ লাখ তরুণ-তরুণী কাজ করছে। আমাদের লক্ষ্য, ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ৫ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান।
বিটিআরসির চেয়ারম্যানের বরাত দিয়ে পলক জানান, দেশে এখন সাড়ে ১১ কোটি নাগরিক ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন।
ন্যাশনাল স্পেস রিসার্চ সেন্টার স্থাপনের কাজটি এখন এটুআইয়ের আইল্যাবে চলমান রয়েছে বলে জানান পলক। পাশাপাশি বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড স্থাপন করায় বাংলাদেশে ডেটা স্টোরেজের ক্ষেত্রে ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে বলে জানান তিনি।
পলক জানান, আগামী ১-২ বছরের মধ্যে ই-নথি কার্যক্রম ডিজিটাল নথি কার্যক্রমে রূপান্তরিত করা হবে। বিগ ডেটা অ্যানালাইসিস, টেক্সট টু স্পিচ, স্পিচ টু টেক্সট, ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং-প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার করে এই ডি-নথি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।
এতেসময় ও অর্থ দুই বাঁচবে। লাল ফিতার দৌরাত্ম্য কমিয়ে এনে আমরা ধীরে ধীরে পেপারলেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের দিকে এগিয়ে চলছি। রে