বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সাত জয়
|
৩১ আশ্বিন ১৪২৯ |
Sunday, October 16, 2022
ওয়ানডে ফরম্যাটে বরাবর ভালো দল বাংলাদেশ। এই ফরম্যাটে ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার পর ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে খেলে টাইগাররা। যা বেশ বড় অর্জনই। কিন্তু টি-টোয়েন্টি সংস্করণে একেবারেই বির্বণ বাংলাদেশ। এই ফরম্যাটের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফর্ম্যান্সতো যাচ্ছে তাই।
বাংলাদেশ ২০০৭ সাল থেকে শুরু করে ২০২১ সাল অনুষ্ঠিত সাতটি বিশ্বকাপের সবক’টিতে খেলেছে বাংলাদেশ। এই সাত আসরে টাইগাররা খেলেছে মোট ৩৩টি ম্যাচ। এই ৩৩ ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে মাত্র ৭টি। হেরেছে ২৫ ম্যাচে। ২০১৬ সালে বৃষ্টির কারণে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টাইগারদের একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়ে যায়।
প্রথম জয়: নিজেদের ইতিহাসে খেলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচটিতেই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে ক্যারিবীয়দের মুখোমুখি হয় টাইগাররা।
বিজ্ঞাপন
সেই ম্যাচটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৬৪ রানে আটকে দেয় বাংলাদেশ। ম্যাচটি পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ জিতে নেয় ৬ উইকেটে। ওই ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে আফতাব আহমেদ ৬২ ও মোহাম্মদ আশরাফুল ৬১ রান করে টাইগারদের দুর্দান্ত জয় এনে দেন। যদিও এর পরের চারটি ম্যাচের সবক’টিতে হারে বাংলাদেশ।দ্বিতীয় জয়: বিশ্বকাপে প্রথম জয়ের পর দ্বিতীয় জয়ের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০১৪ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। সেবার বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত হয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পঞ্চম আসর। মাঝে ২০০৯ সালে দু’টি, ২০১০ সালে দু’টি ও ২০১২ সালের বিশ্বকাপে দু’টি ম্যাচ খেলে টাইগাররা। এই আসরে খেলা সবক’টি ম্যাচই হারে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে সরাসরি মূল পর্বে খেলতে পারেননি সাকিব-তামিমরা। মূল পর্বে খেলার আগে তাদের খেলতে হয় বাছাই। আর বাছাই পর্বে মোট তিনটি ম্যাচ খেলে টাইগাররা। বাছাইয়ে প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারায় তামিম-মুশফিকরা। এটি ছিল বিশ্বকাপে তাদের দ্বিতীয় জয়।
তৃতীয় জয়: বিশ্বকাপে বাংলাদেশের তৃতীয় জয়টিও আসে ২০১৪ সালের বাছাই পর্বে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে জয় পায় বাংলাদেশ। কিন্তু বাছাই পর্বে তৃতীয় ম্যাচে হংকংয়ের বিপক্ষে আবার হেরে যায় টাইগাররা। তবুও মূল পর্বে জায়গা পায় বাংলাদেশ। তবে মূল পর্বে চারটি ম্যাচ খেলে একটি ম্যাচেও জয়ের স্বাদ পায়নি টাইগাররা।
চতুর্থ জয়: বাংলাদেশ ২০ ওভারের বিশ্বকাপে তাদের চতুর্থ জয়টি পায় ২০১৬ সালের বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে। সেবার বাছাইপর্বে প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডেসের মুখোমুখি হয় টাইগাররা। ম্যাচটি বাংলাদেশ জেতে ৮ রানে।
পঞ্চম জয়: বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বশেষ জয়টি আসে ২০১৬ বিশ্বকাপেই এমনকি বাছাই পর্বেই। বাংলাদেশ তাদের পঞ্চম জয়টি পায় ওমানের বিপক্ষে। ২০১৬ বিশ্বকাপেই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। তবুও বাংলাদেশ জায়গা করে নেয় মূল পর্বে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে মূল পর্বের কোনো ম্যাচে জয় তুলে নিতে পারেনি টাইগাররা।
২০০৭ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মূল পর্বে একটি জয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশের ২০১৬ বিশ্বকাপে। আর সেটিও বিশ্বকাপের আয়োজক ভারতের বিপক্ষে। ম্যাচটিতে ভারত বাংলাদেশকে ১৪৭ রান টার্গেট দেয়। জয়ের খুব কাছে গিয়েও বাংলাদেশ ১৪৫ রান তুলতে সমর্থ হয়। এর ফলে মাত্র এক রানের কষ্টকর হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে। আইসিসি’র যেকোনো ইভেন্টে এটি ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে কষ্টকর পরাজয়।
ষষ্ঠ জয়: ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০২১ সাল অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টাইগাররা দু’টি ম্যাচ জয় পায়। প্রথমটি স্বাগতিক ওমানের বিপক্ষে এবং দ্বিতীয়টি পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। ওমানের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ১৫৩ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। জবাবে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৭ রানের বেশি করতে পারেনি ওমান, ২৬ রানে জয় পায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। টাইগার ব্যাটারদের মধ্যে নাঈম শেখ ৬৪, সাকিব আল হাসানের ৪২ রান ছিল উল্লেখ করার মতো। ওমানের ইনিংস ১২৭ রানে গুটিয়ে দিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন মোস্তাফিজ এবং সাকিব আল হাসান। মোস্তাফিজ ৩৬ রানে ৪টি এবং সাকিব ২৮ রানে ৩ উইকেট লাভ করেন। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত নৈপুণ্য প্রদর্শন করায় ম্যাচসেরা হন সাকিব আল হাসান।
সপ্তম জয়: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সপ্তম জয় পেয়েছে ২০২১ সালে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। টাইগাররা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ৫০ এবং সাকিব আল হাসানের ৪৬ রানের নান্দনিক ব্যাটিংয়ে ভর করে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান সংগ্রহ করে। সাকিব, সাইফুদ্দিন ও তাসকিনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ৯৭ রানে গুটিয়ে যায় পাপুয়া নিউগিনির ইনিংস। সাকিব মাত্র ৯ রানে ৪টি, তাসকিন ১২ রানে এবং সাইফ উদ্দিন ২১ রানে ২টি করে উইকেট লাভ করেন। ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন সাকিব আল হাসান।